মানুষ কেন তাঁর জীবনে ব্যর্থ হয় ? জীবনে ব্যর্থ হওয়ার যে কারণগুলো …

 
শৃঙ্খলার অভাব


যার মধ্যে শৃঙ্খলা নেই তার জীবনে ব্যর্থতা অনিবার্য। কারণ, যে কোনও ধরনের সাফল্যের জন্য আপনাকে সুশৃঙ্খল হতে হবে। আপনি পড়াশুনায় ভালাে করতে চান, আপনাকে নিয়মিত পড়তে হবে। ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে চাইলে আপনাকে নিয়মিত গুছিয়ে কাজ করতে হবে। আধ্যাত্মিক সাফল্য চান, আপনাকে ধর্মের নিয়ম সুশৃঙ্খল ভাবে মেনে চলতে হবে। শৃঙ্খলার কোনওই বিকল্প নেই।

যার মধ্যে এই জিনিসটার অভাব আছে, সে কোনও কাজই মন লাগিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে করতে পারে না। যদি আপনি ঠিক করেন সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত প্রতিদিন পড়াশুনা করবেন - তবে যে কোনও মূল্যে আপনাকে তা করতে হবে। রুটিন ব্রেক করা যাবে না। যদি নিজের বা কাছের কোনও মানুষের বিপদ হয়, বা কাউকে সাহায্য করার প্রয়ােজন হয় - তাহলে হয়তাে রুটিন থেকে সাময়িক ভাবে বের হতে পারেন। সেটা শুধুমাত্রই ইমার্জেন্সীর কারণে। কিন্তু খেলা দেখা, আড্ডাবাজি - এই ধরনের অপ্রয়ােজনীয় কাজের জন্য যদি নিয়মিত ভাবে নিজের রুটিন ব্রেক করতে থাকেন, তাহলে কিছুতেই সফল হতে পারবেন না । 

সুশৃঙ্খল মানুষের প্রধান গুণ হল যেই সময়ের কাজ ঠিক ওই সময়েই করা। পৃথিবীর সকল সফল মানুষরা সময়ের মূল্য বােঝেন। আপনি যদি সময়কে মূল্য না দেন, তবে সময়ও আপনাকে মূল্য দেবে না। আলস্য, ঢিলেমি, কাজ ফেলে রাখা, এগুলাে সাফল্যের সবচেয়ে বড় শত্রু। একজন সুশৃঙ্খল মানুষের মাঝে এসব কখনওই থাকতে পারবে না।

সাফল্যের জন্য যখন যেটা করা প্রয়ােজন - সেটা তখনই করুন। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনুন। এই নিয়ন্ত্রণ একবারে আসে না। ধীরে-ধীরে অনুশীলনের মাধ্যমে এটা অর্জন করতে হয়।

অনেক মানুষ বিশ্বাস করে যে, আত্ম নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা একটি জন্মগত গুণ। যার মধ্যে এটা নেই, সে এটা অর্জন করতে পারবে না। এই বিশ্বাসটি দারুন ক্ষতিকর। যতক্ষণ কারও মধ্যে এই বিশ্বাস থাকবে, ততক্ষণ সে নিজেকে বদলাতে পারবে না।

কাজেই, প্রথমে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করুন যে, আপনি চাইলে নিজেকে সুশৃঙ্খল করতে পারবেন। এটার জন্য প্রথমেই সব কাজ সময়মত করার দরকার নেই। প্রতিদিন যে কোনও একটি কাজ ঠিক করুন, যেটা আপনি যে কোনও মূল্যে সময়মত করবেন। এটি কিছুদিন প্রাকটিস করুন, তারপর কাজের
পরিমাণ বাড়ান। প্রয়ােজনে কখন করবেন সেই কাজটা করবেন, তা লিখে রাখুন। এভাবে অনুশীলন করতে থাকলে একটা সময়ে গিয়ে আপনি সব কাজই সময়মত করতে পারবেন।


সহজেই হাল ছেড়ে দেয়া



এই সমস্যার কারণে অনেক প্রতিভাবান ও বুদ্ধিমান মানুষও জীবনে ব্যর্থ হন। আপনার যতই বুদ্ধি আর প্রতিভা থাকুক না কেন, দিন সব সময়ে এক রকম যাবে না। কোনও সময়ে আপনি ভালাে পারফর্ম করবেন। আবার কখনও বা পারফর্মেন্স খারাপ হবে। কাজ করে কখনও ভালাে ফল পাবেন, কখনও আবার পাবেন না।

কিছু-কিছু মানুষ আশার চেয়ে খারাপ ফলাফল পেলেই ধরে নেন যে তাদের দিয়ে আর হবে না। তাঁরা আর চেষ্টা করেন না। এই অভ্যাস মানুষকে ব্যর্থ হওয়ার আগেই ব্যর্থ করে দেয়। কোনও কিছুর শেষ না দেখেই তাকে শেষ বলে ধরে নেন। এটা এক ধরনের মানসিক পঙ্গুত্ব।

আপনি হয়তো খুব ভালো গানের গলা নিয়ে  জন্মেছেন। আশপাশের মানুষের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে-পেতে আপনার মাঝে বিশ্বাস জন্মেছে যে, আপনি এটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারেন। কিন্তু যখন বাইরে পারফর্ম করতে গেলেন, তখন হয়তাে দেখলেন ততটা প্রশংসা পাচ্ছেন না। অপরিচিত মানুষের সামনে পারফর্ম করতে গেলে নার্ভাস হয়ে যাচ্ছেন। আর এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছুদিন এমন
চলার পর হয়তাে আপনি হাল ছেড়ে দেবেন।

এই সময়টাই আসলে হাল ধরে রাখতে হবে। হতাশ না হয়ে অনুশীলন ও শিক্ষা চালিয়ে যেতে হবে।
পৃথিবীর বহু অসাধারণ প্রতিভা এই হাল ছেড়ে দেয়ার কারণে আজ সফল হতে পারেনি। আবার অনেক সাধারণ মানুষ কিছু করার ইচ্ছা পােষণ করে দিনের পর দিন অনুশীলন করে সফল হয়েছেন। হাল না ছেড়ে অনুশীলন ও শিক্ষা চালিয়ে গেলে একটা সময়ে আপনি কাঙ্খিত সাফল্যের দেখা অবশ্যই পাবেন।


পরিকল্পনার অভাব



সফল হওয়ার জন্য শুধু লক্ষ্য বা ইচ্ছা থাকাই যথেষ্ঠ নয়। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য যথাযথ পরিকল্পনা থাকতে হবে।

আপনার পরিকল্পনা নির্ভুল হওয়ার দরকার নেই। এমনও কোনও নিশ্চয়তা নেই যে, আপনি যেভাবে পরিকল্পনা করেছেন সেভাবেই সবকিছু হবে। কিন্তু লক্ষ্যের জন্য পরিকল্পনা থাকলে আপনার হাতে ১টি রােডম্যাপ থাকবে। এটা আপনাকে সত্যিকার কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। প্রতিদিন সকালে উঠে আপনি জানবেন আপনাকে কি করতে হবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে-করতে যদি কোনও ভুল হয়, তবে সব সময়েই আপনি তা পরিবর্তন করতে পারবেন। আর যদি কোনও পরিকল্পনাই না থাকে, তবে কিছুই না করে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবেন। যার ফলাফল ব্যর্থতা।

ঝুঁকি নিতে ভয় পাওয়া




যে কোনও ব্যাপারেই ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। না ভেবেচিন্তে কোনও কিছু করলে অনেক সময়েই বিপদ ঘটে। হুট করে ঝুঁকি নেয়া উচিৎ নয়। কিন্তু যাঁরা অতিরিক্ত নিরাপদ থাকতে চান এবং একটু ঝুঁকি দেখলেই কোনও কিছু থেকে পিছিয়ে আসেন, তারাও বেশিরভাগ সময়ে ব্যর্থ হন।

যদি সত্যিই বড় ধরনের সাফল্য পেতে হয়, তবে আর সবার মত হলে চলবে না। স্রোতের বিপরীতে চলার সাহস রাখতে হবে। ঝুঁকি নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। সবাই যে পথে চলছে, সে পথে চললে সবাই যেখানে পৌঁছাবে, আপনিও সেখানেই পৌঁছাবেন।

আমাদের একটা বড় সমস্যা হল, “মানুষ কি বলবে”, এটা ভেবে নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দেবেন না। বড় স্বপ্ন পূরণ করতে হলে বড় ঝুঁকি নিতেই হয়। আজ যারা আপনাকে নিয়ে কথা কটু বলবে, কাল সাফল্য পেলে তারাই আপনার প্রশংসা করবে। স্বপ্ন পূরণের জন্য যদি প্রচলিত ধারার বাইরে যেতেই হয়, তবে সেই ঝুঁকিটুকু নিন। হাল না ছেড়ে এগিয়ে গেলে দিনশেষে বিজয়ী আপনিই হবেন।


ব্যর্থতার ভয়


কোন কাজ শুরু করার আগেই ব্যর্থতার ভয়। অতিরিক্ত ব্যর্থতার ভয়ের কারণে মানুষ জীবনে অনেক সুযােগ নষ্ট করে ফেলে। কারণ, তারা চেষ্টাই করে না। এটা হল সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। চেষ্টা করলে হয়তাে সাফল্যের সম্ভাবনা ১০%, আর ব্যর্থতার ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলে ব্যর্থতার সম্ভাবনা ১০০%।

যদি জীবনে বড় সাফল্য চান, তবে ব্যর্থ হওয়ার ভয় করবেন না। সাফল্যের পথে সবচেয়ে বড় বাধাই হল ব্যর্থতার ভয়। এটা ভেতর থেকে মানুষকে অনেক বেশি দুর্বল করে ফেলে। এই ভয় কাটিয়ে ওঠার মাধ্যমে আপনি সাফল্যের পথে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপটি নিতে পাবেন। বড় সাফল্যের পথে মাঝে-মাঝে হোঁচট খেতেই হয়। কিন্তু তাই বলে থেমে গেলে চলবে না। একবার ব্যর্থ হয়ে থেমে যাওয়া মানেই আসলে
ব্যর্থতা। ব্যর্থতা না মেনে নিয়ে যতক্ষণ এগিয়ে চলবেন, ততক্ষণ আপনার জেতার সম্ভাবনা থাকবে। হোঁচট খাওয়ার ভয়কে জয় করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই জীবনে ব্যর্থ হবেন না।

ব্যর্থতাকে কখনওই ভুলের শাস্তি হিসেবে দেখবেন না। এটাকে সামনে এগুনাের শিক্ষা হিসেবে দেখুন। ব্যর্থ হওয়ার পর দ্বিগুণ উৎসাহে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগিয়ে যান। ‘রবার্ট এফ কেনেডির একটি উক্তি, “যারা বড় ব্যর্থতাকে ভয় পায় না, একমাত্র তারাই বড় সাফল্য পায়” 


আত্মবিশ্বাসের অভাব


সত্যিকথা বলতে, সাফল্যের জন্য বুদ্ধি আর প্রতিভার চেয়েও আত্মবিশ্বাস জরুরী। কারও হয়তাে দারুন গল্প লেখার প্রতিভা আছে। কিন্তু সেই গল্প অন্যদের পড়ার মত ভালাে, এই আত্মবিশ্বাস তার মধ্যে নেই। তাহলে জীবনেও তার গল্প প্রকাশ করা হবে না। লেখক হিসেবে সে ব্যর্থ হবে। যদিও তার গল্প লেখার প্রতিভা একদম প্রথম শ্রেণীর।

এমন যে কোনও ক্ষেত্রেই সাফল্যের জন্য আত্মবিশ্বাস ১টি অন্যতম শর্ত। একজন ছাত্র যদি বিশ্বাসই না করে যে, তার ভালাে ফলাফল করার যােগ্যতা আছে, তাহলে কিভাবে সে পড়াশুনায় মনােযােগী হবে?

আত্মবিশ্বাস থেকেই মূলত চেষ্টা আসে। নিজের যােগ্যতার ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। প্রাকটিস ছাড়া কোন কিছুতেই মানুষ সেরা পারফর্মার হয় না। আজ হয়তাে চেষ্টা করে পারছেন , কিন্তু প্রাকটিস করলে আগামী সপ্তাহে ঠিকই আরেকটু ভালাে পারবেন। কিন্তু সেই প্রাকটিসটা করার জন্য নিজের যােগ্যতার
ওপর বিশ্বাস থাকতে হবে। যারা নিজের যােগ্যতার ওপর বিশ্বাস করে না, তারা চেষ্টা করারও সাহস পায় না। ফলে, দিনশেষে তারা ব্যর্থ হয়।

আপনি যেটাই করতে চান না কেন, বিশ্বাস করুন যে, “হ্যা আমি পারব, আমার দ্বারা এই কাজটা সম্ভব”। এই বিশ্বাসই আপনাকে চেষ্টা করতে ও সফল হতে অনেকটাই সাহায্য করবে। 

 

অহঙ্কার


পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত যত সত্যি কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ১টি সত্যি কথা হল “অহঙ্কার পতনের মূল”।

আত্মবিশ্বাসের অভাব যেমন মানুষকে চেষ্টা করা থেকে বিরত রাখে, তেমনি অতি আত্মবিশ্বাস বা অহঙ্কারও মানুষকে চেষ্টা ও শেখা থেকে বিরত রাখে।

হয়তাে একজনের অংকে দারুন ভালাে মাথা। খুব সহজেই সে অংক বুঝতে পারে। কিন্তু এটা যদি তার মাথায় বসে যায় যে, তার অনুশীলনের দরকার নেই, সে এমনিতেই পারবে। তাহলে ধীরে-ধীরে সে এই গুণ হারিয়ে ফেলবে। কারণ, আপনি যতই প্রতিভাবান হােন না কেন, নিয়মিত চর্চা না করলে সেই প্রতিভা মরে যাবে।

এছাড়া, অহঙ্কারী মানুষকে কেউ পছন্দ করে না । তাদের সাথে কেউ কাজও করতে চায় না, এবং তাদের কেউ সুযােগ দিতে চায় না। এমন অনেক মানুষই আছেন যাঁরা প্রতিভার কারণে প্রাথমিক ভাবে সফল হয়েছেন, কিন্তু অহঙ্কারের কারণে তারা সেই সাফল্য ধরে রাখতে পারেননি।

অহঙ্কার মানুষকে তার নিজের ভুল ত্রুটি  দেখতে দেয় না। “ইগাে” তাকে অন্ধ করে দেয়, সে যতটা বড়, নিজেকে তারচেয়েও বেশি বড় করে দেখতে শুরু করে। এরা কারও পরামর্শ নেয় না। মনে করে নিজেই সব ভালাে বােঝে। আজ পর্যন্ত যত ক্ষমতাবানের পতন হয়েছে, তারা আসলে ক্ষমতায় থাকতে-থাকতে এতটাই অহঙ্কারী হয়ে গিয়েছিল যে, তারা মনে করত তারা কোনও ভুল করতে পারে না। এটাই তাদের পতন ডেকে এনেছে। আবার অনেক সাধাণ মানুষের মাঝেও এই দোষ আছে। যে নিজের ভুল স্বীকার করেনা, নিজের কমতি বােঝে না - তার পক্ষে উন্নতি করা অসম্ভব। এই ধরনের মানুষরা দিন শেষে ব্যর্থ হবেই।

অতীতের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা না নেয়াও অহঙ্কারের একটি প্রকাশ। তারা ভাবে যে - তারা যা করেছে, ঠিকই করেছে। অন্য মানুষের ভুলের কারণে তারা ব্যর্থ হয়েছে। এটা ভেবে নিয়ে তারা একই ভুল আবারও করে। প্রতিটি ব্যর্থতা আর ভুলের জন্য বিভিন্ন অজুহাত দাঁড় করায়, কিন্তু নিজের ভুল কখনাে স্বীকার করে এবং ব্যর্থতার চক্র থেকে কখনওই বের হতে পারে না।

খুব তাড়াতাড়ি ফলাফল চাওয়া


সফল হওয়ার জন্য অতিরিক্ত তাড়াহুড়া মানুষকে খুব তাড়াতাড়ি ব্যর্থ হতে সাহায্য করে। অনেক মানুষ জীবনে বড় সাফল্যের আশা করে। তারা নিজেদের জন্য অনেক বড় লক্ষ্য ঠিক করে এবং যে কোনও লক্ষ্যই পূরণ করা সম্ভব যদি মানুষ ধৈর্য ধরে লেগে থাকে। কিন্তু অতি দ্রুত সেই লক্ষ্য পূরণের আশা করলে খুব সহজেই হতাশ হয়ে পড়তে হয়। কারণ, যে কোনও বড় লক্ষ্য পূরণ হতে সময় লাগবেই।

কেউ যখন অতি দ্রুত সবকিছু পাওয়ার আশা করে কাজে নামে এবং দেখে তার আশা অনুযায়ী সবকিছু দ্রুত হচ্ছে না - এটা অনেক বেশি মানুষের অনুপ্রেরণা নষ্ট করে ফেলে। তখনই সে হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেয়। আর আগেই বলেছি, হাল ছেড়ে দেয়াটাই হল সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। বড় লক্ষ্য পূরণ করতে হলে আপনাকে ধৈর্য ধরতে শিখতে হবে। বড় লক্ষ্য পূরণের জন্য ধৈর্য ধরে চেষ্টার কোনও বিকল্প নেই।

 

বাংলায় একটা প্রবাদ আছে
“সবুরের ফল মিষ্টি হয়”


Thank you for reading this Article. Please Share this and Support my Websites to Grow Further.

Post a Comment

Please Validate The Captcha

Previous Post Next Post